বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী থেকে এম কে রানাঃ—পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। বাজারে প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের তৈরি পণ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ওই পণ্য। ফলে এসব পেশার সাথে জড়িত মানুষগুলোকে আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। নিজ পেশায় টিকতে না পেরে ভিন্ন পেশায় চলে গেছে উপজেলার ৫শতাধিক বাঁশ-বেত শিল্পের কারিগর। পুঁজি স্বল্পতা, বাঁশ ও বেতের উৎপাদন হ্রাস, আর্থিক অসচ্ছলতা, উপকরণের অভাবেই আজ বিলুপ্তির পথে ঐহিত্যবাহী বাঁশ বেত শিল্প। সারা দেশের মত একসময় ব্যাপক প্রচলন ছিল বাঁশের তৈরি কুলা, ঝুড়ি, চাটাই, হাঁস মুরগির খাঁচা, ঘাড়া, বেতের চেয়ার, ধামা, চালুনি, ঢুলি, খলাই, বুরং, হাত পাখা। কিন্তু বাজারে প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায়, বাঁশ ও মাটির তৈরি জিনিষগুলো প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।
উপজেলার বেতাগী সানকিপুর, বাশবাড়িয়া, রনগোপালদীসহ আরও কয়েকটি এলাকার বংশ পরষ্পরায় বাঁশ ও বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল প্রায় ৫শতাধিক পরিবার। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগই পরিবারের সদস্যরাই পেশা বদল করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নিত্য নতুন প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী তৈরি করে থাকেন। যা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে থাকে। এমনকি এ অঞ্চলের তৈরি এসব কুটির শিল্প সামগ্রী বেশ কয়েকটি দেশে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেলেন মীর মোহাম্মদ আলী
বেতাগী সানকিপুর ইউপির ঠাকুরের হাট গ্রামের গনেশ চন্দ্র হাওলাদার, সুবল মাঝি জানান, একসময় তাদের কাছে ১০-১২জন করে বাঁশ ও বেত শিল্পের কারিগর ছিল। তখনকার দিনে একজন কারিগরের বেতন ছিল প্রতিদিন ২শ”-২শ”৫০টাকা। এখনকার দিনে সে কারিগরদের বেতন দিতে হয় ৪শ”-৫শ’ টাকা। তাও সিজনের সময় পাওয়া যায় না। তারা আরো জানান, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আগে একটি বাঁশের দাম ছিল ৫০-৬০ টাকা, সেখানে এখন প্রতিটি বাঁশ কিনতে ১শ”৯০-২শ’৪০টাকায়। আর নির্বিচারে বন জঙ্গল উজাড় হওয়ার ফলে বেত গাছ এখন খুব একটা চোখে পড়ে না। তাই এ শিল্পের সাথে জড়িত পরিবারগুলো আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে।
উপজেলার ঠাকুরের হাট এলাকার কাত্তিক হাওলাদার কয়েক বছর হলো পৈত্রিক পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন দিন মজুরি করছেন। তিনি বলেন, “বেত শিল্পে টাকা বিনিয়োগ করে খুব একটা লাভ হতো না। এখন গতর খেটে কাজ করি, দিন বাদে ২/৩শ’ টাকা রোজগার হয়। পরিবার নিয়ে খেয়ে পড়ে চলছি। তবে যেদিন কাজ না থাকে সেদিন অনেক কষ্ট হয়। তবে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. রফিকুল ইসলাম (অঃদাঃ) বলেন, “ক্ষুদ্র শিল্প ও কুটির শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গরা আছেন তাদের যদি ঋণ এর প্রয়োজন হয় সহজ শর্তে তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ এর ব্যবস্থা করব, যাতে তাদের আত্মসামাজিক উন্নয়ন ঘটে।”
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply